Attraction of Dainhat Ciy
Ancient History of Dainhat
ইন্দ্রাণী একটি প্রাচীন বিলুপ্ত জনপদ। জানা যায়, এই ইন্দ্রাণী জনপদটি কাটোয়া শহরের দক্ষিণ পূর্বে দাঁইহাটে অবস্থিত। এই নগর অতি প্রাচীন, বর্তমান কাটোয়ার কাছেই অবস্থিত। এই অঞ্চলের মধ্যে কাটোয়া ও দাঁইহাট ব্যতীত আতুহাট চক, কেশিয়া , ঘোষণা, মন্ডল হাট, একাইহাট, বিকিহাট,বেড়া, বাগটিকরী, পাতাই হাট চরপাতাই হাট, ভাউ সিংহ প্রভৃতি মৌজার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। প্রথমে যেসমস্ত জনবসতি গুলি উল্লেখ করা হয়েছে তা মূলত অতীতের ‘ ইন্দ্রাণী ‘ নগরের অংশবিশেষ। সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে সরকার সুলেমানাবাদের অন্তর্গত ‘ ইন্দ্রায়ীন ‘ পরগণার উল্লেখ পাওয়া যায়। তিন শতবর্ষ পূর্বে কবি কাশীরাম এই ইন্দ্রাণী কে লক্ষ্য করেছেন। আর তিনি লিখেছিলেন, –“ ইন্দ্রাণী নামেতে দেশ পূর্বাপর স্থিতি। // এই দ্বাদশ তীর্থের মধ্যে অধিকাংশ কাটোয়া থেকে দাঁইহাট আসার যে রাস্তা তার ধারেই অবস্থিত ছিল। কিন্তু এখন সেই তীর্থের ঘাট বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে। তার থেকে পুরো এক মাইল দূরে গঙ্গা সরে গেছে। অতীতের ইন্দ্রাণী শহর অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী ছিল । প্রাচীন ইন্দ্রেশ্বর শিবের মন্দিরকে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে তুলনা করা হত । পাথর নির্মিত সেই মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এখনও ছড়িয়ে - ছিটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায় । এখনও ইন্দ্ৰ দ্বাদশীর দিন বহু মানুষ ইন্দ্রেশ্বর ঘাটে পুণ্যস্নানের জন্য আসেন । এই ঘাট পেরিয়ে চৈতন্যদেব সন্ন্যাস গ্রহণের জন্য কাটোয়ায় কেশব ভারতীর কাছে এসেছিলেন ।
এই পরগনার দাঁইহাট শিক্ষাদীক্ষা , ধর্মকর্মে অনেক এগিয়ে ছিল । বর্ধমানের রাজারা তীর্থজ্ঞানে এখানে তাঁদের সমাজবাড়ি নির্মাণ করেছিলেন । দাঁইহাটের পাথরশিল্প , কাঁসা - পিতল শিল্প , তসরশিল্প , দড়িশিল্পের খুব খ্যাতি ছিল । ক্ষীরগ্রামের মা যোগাদ্যা মূর্তি , দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মূর্তি বাংলা তথা ভারতের বহু মন্দিরের দেবতার মূর্তি এখানকার শিল্পীরা তৈরি করেছিলেন । দক্ষিণেশ্বরের মা কালীর মূর্তির শিল্পী নবীন ভাস্করের সুনাম বহু জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিল ।